প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ
দেবে সরকার। শিক্ষার্থীদের সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে এই দুই বিষয়ের
শিক্ষক নিয়োগের চিন্তা করছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, প্রথমে সব স্কুলে না হলেও অন্তত দুই-তিনটি ক্লাস্টার মিলিয়ে
দুইজন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে শিক্ষকরা ক্লাস্টারভুক্ত স্কুলগুলোয়
রোটেশনে ক্লাস নিতে পারেন।
এ ছাড়াও প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষক সংকট নিরসনের লক্ষ্যে আগামী জুন
মাসের মধ্যে ৩৪ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করছে
মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদও পূরণ করা হবে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরশীল সূত্র জানিয়েছে, নতুন করে
২৪ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আনন্দ দিতে প্রথমবারের মতো সংগীত ও শারীরিক শিক্ষা
বিষয়ে ১০ হাজার বিশেষ শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিশক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো.
গিয়াস উদ্দিন আহমেদ আমাদের সময়কে বলেন, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন
কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় ধরা
হয়েছে ১ হজার ৯০০ কোটি টাকা। জুনের আগেই এটি একনেকে পাস করানোর চেষ্টা
রয়েছে। জুলাই থেকে কাজ শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে
নতুন করে ২৪ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রথমবারের মতো
প্রাইমারির শিক্ষার্থীর জন্যও সংগীত ও শারীরিক শিক্ষক নিয়োগ করার বিষয়টিও
বিবেচনাধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, স্কুলগুলোয় শূন্যপদে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ, পাঠদানে সুন্দর ও
আকর্ষণীয় উপকরণ ব্যবহার, ডিজিটাল স্মার্ট ক্লাসরুম, নিয়মিত ধারাবাহিক
মূল্যায়ন ও সহশিক্ষা কার্যক্রম রেখে একেকটি স্কুল ‘চাইল্ড কেয়ার হোম’ রূপে
গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, সারা দেশে বর্তমানে সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৪ হাজার ৮২০টি। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষক নেই সাড়ে ২১
হাজার স্কুলে। সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার পদ শূন্য। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ
নীতিমালা অনুযায়ী মোট শূন্য পদের ৩৫ শতাংশ সরাসরি এবং ৬৫ শতাংশ পদোন্নতির
মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। ৬৫ শতাংশ হিসেবে পদোন্নতিযোগ্য পদ ১৭ হাজার এবং
সরাসরি নিয়োগযোগ্য পদ চার হাজার। ২০১৪ সালে প্রধান শিক্ষকদের পদটি দ্বিতীয়
শ্রেণি হওয়ায় এ পদে নিয়োগ হয় পিএসসির মাধ্যমে।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. এএফএম মনজুর কাদির বলেন, ৪ হাজার ৩২০টি পদে
নিয়োগ দিতে গত মাসে পিএসসিতে চাহিদা পাঠিয়েছি। ৩৬তম বিসিএসে উত্তীর্ণদের
দ্রুত এসব শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হবে।
জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি
প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই)। ক্ষুব্ধ হয়ে আদালতে মামলা
করেন প্যানেল ও পুলভুক্ত শিক্ষকরা। উচ্চ আদালত এসব শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়ার
নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে পুল ও প্যানেল শিক্ষকদের নিয়োগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত
নতুন নিয়োগ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। ওই সময়ে প্রায় ১২ লাখ আবেদন জমা
পড়েছিল। কিন্তু মামলার কারণে নতুন নিয়োগ আটকে যায়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জানান, মামলা জটিলতার কারণে
এতদিন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছিল না। মামলা নিষ্পত্তি হওয়ায় ২০১৪ সালের
স্থগিত নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করে আরও ২৪
হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, স্কুলে
শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার মাত্র ৪০ শতাংশ শেখানো হয়। বাকি ৬০ শতাংশই নির্ভর করে
শিক্ষার্থীর ওপর। অথচ উন্নত বিশ্বে শিক্ষার্থীর শিখন অর্জনে স্কুলের
ভূমিকাই ৭০ শতাংশ। বাকিটা শিক্ষার্থীর কার্যক্রম বা উপাদানের ভূমিকা। দেশে
স্কুলগুলোয় শ্রেণিকক্ষে কাক্সিক্ষত লেখাপড়া না শেখার প্রধান কারণ শিক্ষক
সংকট।
http://www.dainikamadershomoy.com/todays-paper/firstpage/124021/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A5%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A7%A7%E0%A7%A6-%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%97%E0%A7%80%E0%A6%A4-%E0%A6%93-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%95-%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0
0 comments:
Post a Comment