[ গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার থেকে উচ্ছেদের শিকার সাঁওতালরা এখন
তীব্র শীতে মাদারপুরে তাঁবু টানিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন -যুগান্তর ]
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া
সাঁওতাল-বাঙালিরা এখনও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। প্রথমদিকে কলাপাতা ও
ডাল-পালা দিয়ে ডেরা বানালেও কিছুদিন থেকে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সাহায্য
সংস্থার দেয়া তাঁবুর নিচে থাকার সুযোগ হয়েছে। তবে মাথা গোঁজার অস্থায়ী
ঠাঁই হলেও শীতের তীব্রতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না তারা।
অন্যদিকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজও প্রাথমিক পর্যায়ে। কাজেই শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন হামলার শিকার হয়ে সাপমারা ইউনিয়নের জয়পুর ও মাদারপুর গ্রামের মিশন গির্জার পাশে বা খোলা মাঠে দিন কাটাচ্ছে অন্তত ৩শ’ পরিবার। এর বাইরে ওই পল্লীর সাধারণ সাঁওতালরাও শীতে কষ্ট পাচ্ছেন।
মাদারপুরের মনিকা টুডু জানান, তাঁবুর নিচে মাটির ওপর খড় বিছিয়ে তার ওপর চাদর কিংবা সাহায্যের কম্বল বিছিয়েও শীত ঠেকানো যাচ্ছে না। অনেক প্রতিষ্ঠান কম্বল দিলেও শীত নিবারণের জন্য আদিবাসীদের চাহিদা আরও অনেক বেশি। আদিবাসী নেতা রাফায়েল হাসদা জানান, খোলা প্রান্তরে আশ্রিতরা বেপরোয়া অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের কারণে শীতবস্ত্র হারিয়েছেন। তাদের কেনারও সামর্থ্য নেই। তাই শীতের তীব্রতা যত বাড়ছে ততই মুশকিলে পড়ছেন তারা।
জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জের কাটাবাড়ি ইউনিয়নে ইক্ষু খামারের জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া মানুষদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। তবে কাজ খুব বেশি এগোয়নি। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হান্নান জানান, ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৩শ’ মানুষ বসবাস করতে পারবেন। এখন পর্যন্ত ৩৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু আদিবাসীরা এ আশ্রয়ণ প্রকল্পের উদ্যোক্তাকেই সন্দেহের চোখে দেখছেন। এ ব্যাপারে আদিবাসীদের কোনো আগ্রহ নেই। শীত, নিরাপত্তাহীনতা সত্ত্বেও তারা বাপ-দাদার জমিতে ফিরতে চান। সে জন্য সব কষ্ট সহ্য করতে তারা রাজি।
আদিবাসী নারী রীনা টুডু জানান, দুর্বৃত্তদের আক্রমণে জীবনহানির পরও লক্ষ্য থেকে তারা সরতে রাজি নন। পুনর্বাসন যদি করতেই হয় তাহলে তা তাদের ইক্ষু খামারের বাপ-দাদার জমিতেই করতে হবে। অপরদিকে সাঁওতাল নেতা পাওলুস মুরমু বলেন, পুনর্বাসনের কথা বলে ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত করার ষড়যন্ত্র মেনে নেয়া হবে না। সে ক্ষেত্রে তারা শীতের ছোবলকে মোকাবেলা করে টিকে থাকার চেষ্টা করবেন। তারা তাদের বাপ-দাদার ভূমি ফিরে পাওয়ার দাবির আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
http://www.jugantor.com/last-page/2016/12/19/86117/%E0%A6%B6%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%93%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AD%E0%A7%87%E0%A6%BE%E0%A6%97
0 comments:
Post a Comment